চলছে আমের মৌসুম। এখন কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এই গরমে এক গ্লাস কাঁচা আমের জুস আপনাকে প্রশান্তি দেবে। এছাড়াও কাঁচা আমের জুসের পুষ্টিগুণও অনেক। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। দুপুরে খাওয়ার পর এই গরমে কিছুটা ঝিমুনি ভাব দেখা দিতে পারে। কাঁচা আমে আছে প্রচুর শক্তি। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি দূর হয়।
কাঁচা আমের জুসের যেসব গুণের কথা বলেন পুষ্টিবিদরাঃ
শরীরে লবণের ঘাটতি পূরণ করে
গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি পূরণ করে। যারা ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে চান, তারা এই সময়ে নিয়মিত কাঁচা আম বা এর জুস খেতে পারেন।
পেট ভালো রাখে
গরমে অনেক সময় পেটের গোলমাল দেখা দেয়। এক গ্লাস আমের জুস দারুণ কাজে লাগতে পারে এক্ষেত্রে। খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।
হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী
কাঁচা আমকে হৃদ্যন্ত্রবান্ধব বলা হয়। এতে আছে নিয়াসিন নামের বিশেষ উপাদান। এটি হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় এবং ক্ষতিকর কোলস্টেরল স্তরকে কমাতে সাহায্য করে। যকৃতের রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক সমাধানও হতে পারে কাঁচা আম।
স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া বন্ধ করে
কাঁচা আম শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘সি’ এর জোগান দিতে পারে। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। আমচুর স্কার্ভি নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে কাঁচা আম।
শুরু করবেন যেভাবে
প্রথমে দুটি কাঁচা আম নিবেন। গাছ থেকে পেড়ে বা বাজার থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। বর্তমানে বাজারে প্রচুর কাঁচা আম পাওয়া যায় এবং দামেও সস্তা। দুটি আম ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন, এরপর মুছে ফেলবেন। এবার সরিষা বা সয়াবিন তৈল মাখিয়ে আম দুটিকে গ্যাসের চুলায় পোড়াতে দিবেন। দুই বা তিন মিনিট পর পর আম দুটিকে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দিবেন। আম দুটি প্রায় ১০ মিনিট সময়ের মধ্যে সিদ্ধ হয়ে যাবে। কাঠের চুলাতেও পোড়াতে পারেন, সে ক্ষেত্রে পুড়তে সময় কম লাগবে। এবার গ্যাসের চুলা বন্ধ করে দিয়ে আম দুটি নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হবার পর আমের উপর থেকে খোসাসহ কালো অংশগুলো ছাড়িয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
উপকরণ
দুটি আমের জন্য সাধারণ গ্লাসের দুই থেকে আড়াই গ্লাস পানি, এক চিমটি লবণ, আধা চিমটি বিট লবণ, একটি কাঁচামরিচের অর্ধেক, তিন থেকে চার টেবিল চামচ চিনি, দু’ তিনটি পুদিনা পাতা, অল্প একটু সাধারণ গোল মরিচের গুড়া লাগবে।
মিশ্রণ প্রক্রিয়া
সকল উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ডারের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন। সম্ভব হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মিশ্রণটি তৈরি করবেন।
পরিবেশন
পরিবেশনের জন্য ট্রান্সপারেন্ট কাচের গ্লাসে একটু উঁচু থেকে মিশ্রণটি ঢেলে দিন, একটু উপর থেকে ঢালুন যাতে করে গ্লাসের উপরের দিকে খানিকটা বাবলস তৈরি হয়। এখন গ্লাসের মধ্যে ফ্রিজ থেকে অথবা আগে থেকে সংগ্রহে রাখা দুই তিন টুকরা বরফ দিন। এরপর গ্লাসের মধ্যে একটা স্ট্র দিয়ে অথবা না দিয়ে পরিষ্কার পিরিচের উপর গ্লাসটি বসিয়ে পরিবেশন করুন। সম্ভব হলে একটি আমের পাতা ভালো করে ধুয়ে ভাঁজ করে গ্লাসটির উপরের অংশে বসিয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন ঠান্ডা ঠান্ডা মজাদার কাঁচা আমের জুস।