ফুটবলে বাংলাদেশের সুসময় এখন অতীত। সময় যত গড়িয়েছে ঠিক ততটাই পিছিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। যার আরেকটি উদাহারণ হয়ে থাকবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে লেবাননের বিপক্ষের ম্যাচটি। ভারতের বেঙ্গালুরু শ্রী কান্তিরামা স্টেডিয়ামে আশা জাগিয়েও বেদনাহত গতে হলো বাংলাদেশকে। লেবাননের কাছে ২-০ গোলে হেরে সাফ যাত্রা শুরু করলো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সাফে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যাশা খুব বেশি নয়। তার ওপর টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলাটাও ছিলো চাপের। এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের চিন্তাও করেনি খুব বেশি মানুষ। অন্তত এই ম্যাচ থেকে ১ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়াই ছিলো লক্ষ্য। ম্যাচের শুরু থেকে সেই কাজটাই করেছে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে লেবাননের দুটি নিশ্চিত সুযোগ রুখে দিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। রক্ষণ সামলে মাঝে-মধ্যে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে পড়লেও ফিনিশিংয়ের দুর্বলতা ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবুও গোলশূন্য অবস্থাতেই বিরতিতে গিয়েছিলো দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তিন বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামায় লেবানন। তাতে পশ্চিম এশিয়ার দলটির খেলার গতি বাড়ার পাশাপাশি আক্রমণের ধারও বাড়ে। তবে প্রথমার্ধে ছন্দহীন বাংলাদেশও নতুন উদ্যমে খেলতে থাকে দ্বিতীয়ার্ধে। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করেছিলেন সোহেল রানা-ফাহিমরা। ম্যাচে প্রথম ভালো সুযোগটিও পেয়েছিলো বাংলাদেশ। সোহেল রানার বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়ে যান ফাহিম। লেবানন গোলরক্ষকে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেনি এই স্ট্রাইকার। তাতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হারায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের ৭৯ মিনিটে বাংলাদেশের ভুলে লিড নেয় লেবানন। রক্ষণভাগের খানিকটা উপর থেকে ব্যাকপাসে বল দেয়া হয়েছিলো তারিক কাজিকে। তবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফিনল্যান্ডের এই ফুটবলার তা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। সেখান থেকে দারউইচের পাস থেকে গোল করেন হাসান মাতুক। এরপর গোল শোধে মরিয়া হয়ে উঠলেও উল্লেখযোগ্য কোন আক্রমণ গড়তে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। উল্টো ম্যাচের অন্তিম মুহুর্তে খলিলের গোলে ২-০ ব্যবধানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
এই ম্যাচে ড্র করার যে উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলো বাংলাদেশ, সেটিতে বেশ সফলও হয়েছিলো দল। তবে শেষ ১৫ মিনিটে চাপ সামলাতে ব্যর্থ হওয়ার খেসারত দিতে হলো হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের। তবে লেবাননের বিপক্ষে হারলেও এখনই সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়নি বাংলাদেশের। সেটি করতে হলে ভূটান ও মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় ভিন্ন কোন পথ নেই জামাল ভূঁইয়াদের। সেই সাথে অপ্রাপ্তির ফুটবলে, প্রাপ্তির নতুন পালকের জন্য অপেক্ষাটাও তাই বাড়লো।