আনসার বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা করলে মৃত্যুদণ্ড

আনসার ব্যাটালিয়নের কোনও সদস্য বিদ্রোহে জড়ালেই সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। এছাড়া অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী, বিদ্রোহী কিংবা বিদ্রোহে প্ররোচনাকারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হবে। তবে সশ্রম কারাদণ্ডের মেয়াদ পাঁচ বছরের কম হবে না। বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে বিচারের পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে দণ্ড কার্যকর হবে।

এমন সব বিধান রেখে আনসার ব্যাটালিয়ন আইন-২০২৩-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। নতুন আইন কার্যকর হলে বিদ্যমান ব্যাটালিয়ন আনসার আইন ১৯৯৫ রহিত হয়ে যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব বলেন, বিদ্রোহ সংগঠন বা বিদ্রোহ সংগঠনের প্ররোচনায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড রাখা হয়েছে। আগের আইনে বিদ্রোহের বিষয়টি ছিল না। নতুন আইনে অপরাধ বিচারের জন্য সংক্ষিপ্ত আনসার আদালত এবং বিশেষ ছাড় আদালত নামে দুটি আদালত গঠিত হবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বিদ্রোহ বলতে বোঝাবে, ব্যাটালিয়নের দুই বা ততোধিক সদস্য সম্মিলিতভাবে বাহিনী বা শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও কর্তৃপক্ষের আইনানুগ আদেশ অমান্য করা বা উক্ত কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করা, প্রতিহত করা বা উৎখাত করা অথবা দুই বা ততোধিক ব্যক্তি তাদের বৈধ বা অবৈধ অসন্তুষ্টি সম্মিলিতভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকাশ করা বা ওই রূপ কার্যকরণের কোনও প্রচেষ্টা গ্রহণ করা।

আইনের ২০ ধারায় বলা হয়েছে, ব্যাটালিয়নের কোনও সদস্য বাহিনীর অভ্যন্তরে অথবা শৃঙ্খলা বাহিনীতে বিদ্রোহ করলে, বিদ্রোহে প্ররোচনা দিলে কিংবা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড। তবে কারাদণ্ডের মেয়াদ কোনভাবেই পাঁচ বছরের কম হবে না।

অপরাধের বিচার হবে বিশেষ আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতে। বিশেষ এবং সংক্ষিপ্ত আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের যে কোনও দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিশেষ এবং আনসার ব্যাটালিয়ন আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা যাবে। আনসার ব্যাটালিয়ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আদেশ প্রাপ্তির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বাহিনীর মহাপরিচালক বরাবর আপিল করতে হবে।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার বিষয়ে ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর গাজীপুরের সফিপুরে আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ অসন্তোষ একপর্যায়ে বিদ্রোহে রূপ নেয়। সেনাবাহিনী, বিডিআর ও পুলিশের সহযোগিতায় ওই বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করে সরকার।

Reendex

Must see news