জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসেবে প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামানকে পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহৎ স্বার্থে তাকে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বসম্মতিক্রমে রেজিস্ট্রারের পুনঃনিয়োগ দেয়া হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে একটি পক্ষ সমালোচনায় মেতে উঠেছে। এমনকি রেজিস্ট্রারের এই নিয়োগকে ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করা হয়েছে বলেও বলা হচ্ছে।
ড. কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের প্রজেক্টের কাজ চলমান রয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রজেক্টের প্রথম ধাপের কাজ শেষ করতে হবে। বর্তমান রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক ও নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি নিঃসন্দেহে একজন অভিজ্ঞ রেজিস্ট্রার। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সার্বিক দিক বিবেচনা করেই তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি শুরু থেকেই নতুন ক্যাম্পাসের কাজের সাথে জড়িত আছেন। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা কেন্দ্রিক একটি বড় ও সনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়। ছোট এই ক্যাম্পাসে ৩৬টি বিভাগ, দুটি ইন্সটিটিউট ও সাতটি অনুষদ রয়েছে। আমাদের লোকবলও সংকট আছে। সবমিলিয়ে এখানে রেজিস্ট্রার হিসেবে একজন অভিজ্ঞ লোক দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন কাউকে দায়িত্ব দিলে তার কাজ বুঝতে কমপক্ষে ছয়মাস সময় লেগে যাবে। আমরা রেজিস্ট্রারকে মাত্র এক বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছি। উপাচার্য প্রয়োজন মনে করলে একবছরের আগেও বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘ইউজিসি থেকে চিঠি আসলেও এখন আমরা এ ব্যাপারে কিছুই করতে পারবো না। উপাচার্য দেশে আসলে আলাপ-আলোচনা করে ইউজিসিকে বিষয়টি জানাবেন। ইউজিসির সাথে কথা বলেই উপাচার্য এ নিয়োগ দিয়েছেন।’
এর আগে গত ছয় জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানকে আরও এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী অবসরোত্তর ছুটি ও সংশ্লিষ্ট সুবিধা স্থগিতের শর্তে ১৪ জুন থেকে তার নতুন নিয়োগ কার্যকর হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তার মাসিক বেতন নির্ধারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে অন্যান্য ভাতা ও সুবিধা পাবেন বলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকুরি আইন ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানকে তার অভোগকৃত অবসরোত্তর ছুটি ও এ সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিতের শর্তে আগামী ১৪ জুন অথবা যোগদানের দিন থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হলো।
২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে যোগ দেন। আগামী ১৩ জুন তার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে নতুন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে তার অবসর নেয়ার সময় আরও এক বছর পেছালো৷
এর আগে চলতি বছরের ২৫ মে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগ পেয়েছেন কাজী শহীদুল্লাহ। এছাড়াও ইউজিসির প্রায় সকল সদস্যকে পুনঃনিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আখতারুজ্জামানকে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।