বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচে হারলো বাংলাদেশ

ওয়ানডে সুপার লিগে তিন নম্বরে থেকে বিশ্বকাপে খেলতে আসা বাংলাদেশ দল যেন ক্রিকেটটাই ভুলে গেছে। জয় যেন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে টাইগারদের জন্য। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর টানা পাঁচ ম্যাচ হেরে আজ কলকাতায় পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বিধিবাম, এই ম্যাচেও কাটেনি জয়খরা। সাত উইকেটের বড় ব্যবধানে পরাজয় বরণ করে টাইগাররা।

দিনের শুরুটা যদিও জয় দিয়েই শুরু করেন সাকিব আল হাসান। কলকাতায় টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি। আজও যথারীতি শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের। বিশ্বকাপের এবারের আসরে টাইগারদের টপ অর্ডার মানেই পাওয়ার প্লেতে সাজঘরে ফিরে যাওয়া। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার তানজিদ তামিম। এরপর ক্রিজে এসে দাঁড়াতেই পারেননি টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্র ৩ বলে খেলে ৪ রান করে ফিরেছেন সাজঘরে। দলীয় ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্রিজে আসেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। হারিস রউফের করা ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মোহাম্মদ রিজওয়ানের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি। ২৩ রানেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। আবারও ব্যর্থ হয় টপ অর্ডার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেছেন ওপেনার লিটন দাস ও বিশ্বকাপে ভালো ফর্মে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই দুই ডানহাতি ব্যাটার মিলে ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন। পাকিস্তান বোলারদের দেখেশুনে খেলে সচল রেখেছেন রানের গতিটাও। মিডেল ওভারে (১১-২০) কোনও উইকেট না হারিয়ে তুলেছেন ৫৯ রান। দুই ব্যাটারের জুটিতে ২১তম ওভারেই দলের শতরান পূরণ হয়েছে। তবে হঠাৎ ইফতিখার আহমেদের বলে বাজে এক শট খেলে ৬৪ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন লিটন।

লিটন ফিরে গেলেও নিজের অর্ধশতক তুলে নেন অভিজ্ঞ রিয়াদ। তবে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার পর ৫৬ রান করে আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন সাইলেন্ট কিলার। রিয়াদের পর ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। ৩ বলে ৭ রান করে ওসামা মীরের ঘূর্ণিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। হৃদয় ফিরে গেলে মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন সাকিব। তাদের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন পেসার হারিস রউফ। ৬৪ বলে ৪৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার দলপতি। শেষ দিকে মিরাজের ২৪ রানের ইনিংসে স্কোরবোর্ডে ২০০ রান তুলে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি পেসারদের বোলিং তোপে নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগেই ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা।

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন রিয়াদ।

বাংলাদেশের দেয়া ২০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফখর জামান ও আব্দুল্লাহ শফিক। তাদের শত রানের জুটিতে সহজেই জয়ের ভীত পেয়ে যায় বাবর আজমের দল। নিজের অর্ধশতক পূরণ করে শফিক সাজঘরে ফিরে গেলেও এক প্রান্ত আগলে রাখেন ফখর জামান। মিডেল ওভারে মেহেদী হাসান তিন উইকেট পেলেও পাকিস্তানের জয়ের পথে তা বাধা হতে পারেনি।

৭৪ বলে ৮১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে মিরাজের বলে তৌহিদ হৃদয়কে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ফখর জামান। শেষ দিকে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে হেসেখেলে ১০৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। এমন জয়ে পয়েন্ট তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে বাবর আজমের দল। ফলে কাগজে-কলমে এখনো টিকে রইল পাকিস্তানের সেমি-ফাইনালের আশা।