কে জিতবেন এবারের ব্যালন ডি’অর? লিওনেল মেসি এবং আর্লিং হলান্ড এই দুটি নামই ঘুরছিল ফুটবল অনুরাগীদের মুখে। অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার শেষে ঘোষণা করা হলো ব্যালন ডি’অর ২০২৩ জয়ীর নাম। দীর্ঘ ফুটবল ক্যারিয়ারে অষ্টম ব্যালন ডি’অর জিতলেন লিওনেল মেসি। মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন আইতানা বনমাতি।
আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মিয়ামি তারকা সোমবার সন্ধ্যায় প্যারিস থেকে পুরুষদের পুরস্কার ঘরে তুলেছেন, একইসঙ্গে বার্সেলোনা ও স্পেনের মিডফিল্ডার জিতেছেন মহিলাদের পুরস্কার।
সাদা শার্টের ওপর কালো কোট এবং কালো বো টাইয়ে সজ্জিত হয়ে তিন ছেলে ও স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে সঙ্গী করে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন মেসি। মেসি মঞ্চে উঠা মাত্রই উপস্থিত দর্শকদের লিও লিও ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারপাশ। মঞ্চে এসে প্রথমে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে এবং পরে একক ছবি তোলেন মেসি।
এদিন আইভোরি কোস্টের কিংবদন্তি ফুটবলার দিদিয়ের দ্রগবার সঙ্গে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ফরাসি সাংবাদিক ও উপস্থাপক স্যান্ডি হেরিবার্ট। ফুটবলের মহারথীদের মাঝে আলাদাভাবে দৃষ্টি কেড়েছে টেনিস মহাতারকা নোভাক জোকোভিচের উপস্থিতি।
মেসির অষ্টম ব্যালন ডি’অর জেতার ঘোষণা দেন কিংবদন্তি ইংলিশ মিডফিল্ডার ডেভিড বেকহাম।
মেসির নাম ঘোষণার পর উপস্থিত দর্শকরা দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান জানায়।
ব্যালন ডি’অর জয়ের প্রতিক্রিয়ায় মেসি বলেন, ‘মুহূর্তটা উপভোগের জন্য এখানে আরেকবার উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত।’ এ সময় বিশ্বকাপ জয়ের অনুভূতিও নতুন করে দর্শকের সামনে তুলে ধরেন মেসি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতাটা ছিল আমার স্বপ্ন। এটা খুবই বিশেষ ব্যাপার ছিল যে অন্য দেশের মানুষরাও চেয়েছে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতুক।’
ক্যারিয়ারের অভাবনীয় সফলতা নিয়ে মেসি আরো বলেন, ‘নিজের এমন ক্যারিয়ার আমি স্বপ্নেও ভাবিনি। আমি যা অর্জন করেছি তা করার জন্য আমার ভাগ্য দারুণ সুপ্রসন্ন ছিল। আমি বিশ্বের সেরা দলে খেলেছি, ইতিহাসের সেরা দলে খেলেছি। এটা আমার জন্য ট্রফি জেতা এবং ব্যক্তিগত পুরস্কার জেতার কাজটাকে সহজ করেছে।’
গত বছর ক্লাব ফুটবলে পিএসজির হয়ে বলার মত কোনও অর্জন না থাকলেও আলবিসেলেস্তেদের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ে অসাধারণ পারফর্মেন্স তাকে ব্যালন ডি’অরের অন্যতম দাবিদার করে তোলে। যদিও বিশ্বকাপের পর ব্যালন ডি’অর নিয়ে তাঁর আর কোনও আকাঙ্ক্ষা না থাকার কথা জানিয়েছিলেন মেসি। তিনি বলেছিলেন, ‘সত্যি হচ্ছে, এটা নিয়ে আমি অতটা ভাবছি না। যদি পুরস্কারটা পাই, ভালো। আর যদি না পাই, কিছুই আসে যায় না।’
অনুষ্ঠানে ব্যালন ডি’অর নিয়ে এমন নির্লিপ্ততার কারণও জানিয়েছেন মেসি, ‘আমি আমার ক্যারিয়ারে এটা অনেকবার বলেছি যে ব্যালন ডি’অর গুরুত্বপূর্ণ একটা পুরস্কার। ব্যক্তিগত পর্যায়ে এটা সবচেয়ে সুন্দর পুরস্কার। কিন্তু আমি কখনোই এটাকে অতটা গুরুত্ব দিইনি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল দলীয় অর্জন।’
২০০৯ সালে ক্যারিয়ারের প্রথম ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন মেসি। এরপর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০০৯ থেকে ২০১২ টানা চারটি ব্যালন ডি’অর জিতেন এই মহাতারকা। এরপর ২০১৫, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেন তিনি। ২০২২-২৩ মৌসুমের ব্যালন ডি’অর জিতে ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ আট ব্যালন ডি’অরের মালিক মেসি। পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জিতে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো।